তুলসী খুব প্রাচীন একটি ভেষজ উপাদান যার বৈজ্ঞানিক নাম হলো Ocimum sanctum. তুলসী পাতার বেশ কিছু ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে আর তাই বিভিন্ন রোগের ঘরোয়া চিকিৎসায় এটি‌ ব্যবহার করা হয়। তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম ও সতর্কতা সম্পর্কে এই অনুচ্ছেদে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তুলসী পাতার উপকারিতা 

তুলসী পাতায় কিছু এসেনশিয়াল অয়েল ও ফাইটোকেমিক্যালস রয়েছে যা শরীরের জন্য খুব উপকারী ভূমিকা রাখে। এছাড়াও সামান্য পরিমাণ ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি রয়েছে। তুলসী পাতার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলোঃ (Sengupta, 2020)

১। সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ইত্যাদি নিরাময়ে ঘরোয়া উপাদান হিসেবে তুলসী পাতার রস খুব উপকারী ভূমিকা রাখে।  

২। ঠান্ডাজনিত গলা ব্যথা দূর করতে গরম পানিতে তুলসী পাতার রস, আদা, লবণ ইত্যাদি মিশিয়ে গড়গড়া করতে পারেন। 

৩। তুলসী পাতা পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম ভালো রাখতে সহায়তা করে।‌‌ আর তাই হজমের সমস্যা দূর করতে প্রাকৃতিক পদ্ধতি হিসেবে তুলসী পাতার রস খেয়ে দেখতে পারেন। 

৪। মাথাব্যথা ও আর্থ্রাইটিস জনিত‌‌ ব্যথার ক্ষেত্রে তুলসী পাতা উপশম দিতে পারে। কারণ, তুলসী পাতায় থাকা এসেনশিয়াল অয়েল ও‌ ফাইটোকেমিক্যাল ব্যথা ও প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। 

৫। তুলসী পাতার এন্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলী কোষের অকাল মৃত্যু ঠেকায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।

৬। তুলসী পাতা মানসিক চাপ, বিষন্নতা ও অনিদ্রা সমস্যা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ক্লান্তিকর কাজের পর এক কাপ চায়ের সাথে তুলসী পাতা যোগ করে পান করলে সতেজ ও প্রাণবন্ত অনুভব করবেন। 

৭। তুলসী পাতা ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।‌ 

৮। তুলসী পাতা শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং লিভারকে সুস্থ রাখে। 

৯। এসেনশিয়াল অয়েলের উপস্থিতির ফলে তুলসী পাতা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী ভূমিকা রাখতে পারে। তুলসী পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন এবং ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকের উপরে মৃতকোষ, ময়লা, দাগ ইত্যাদি দূর হবে এবং ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।‌ 

তুলসী পাতার অপকারিতা 

তুলসী পাতায় তেমন কোনো ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে। তবে যারা রক্ত তরল রাখার জন্য Warfarin গ্রুপের ঔষুধ সেবন করেন তাদের জন্য তুলসী পাতা এড়িয়ে যাওয়া উত্তম। কারণ, তুলসী পাতা রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। এছাড়াও গর্ভবতী নারীদের জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার ব্যাপারে গাইনী ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। 

তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

কাঁচা সতেজ তুলসী পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া বা‌ রস বানিয়ে পান করার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে এভাবে খেতে না পারলে হালকা গরম পানির সাথে অথবা চায়ের সাথে যোগ করে খেতে পারেন। এছাড়াও খাবারের বিভিন্ন রেসিপিতে অথবা সালাদ ও শরবতের সাথে পছন্দমতো তুলসী পাতা যোগ করতে পারেন যা ফ্লেভার ও গুণাগুণ বৃদ্ধি করবে। কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম হলো সামান্য গরম পানিতে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে ঘন ঘন‌ কয়েকবার খেতে হবে।  

References

Sengupta, S. (2020, November 05). 9-incredible-benefits-of-basil-leaves-you-may-not-have-known. Retrieved from NDTV: https://food.ndtv.com/food-drinks/9-incredible-benefits-of-basil-leaves-you-may-not-have-known-1834742/amp/1

Last Updated on April 12, 2023