পৃথিবীর একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে এটা অজানা যে, হার্নিয়া রোগটি প্রাণঘাতী হতে পারে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা International centre for health statistics এর সমীক্ষা অনুসারে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ হার্নিয়া রোগে ভুগছে যার মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে। তবে হার্নিয়া এমন একটি ব্যাধি যার উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। অন্যথায় যত দেরি হবে ততই সমস্যা জটিল থেকে আরো জটিলতর হতে থাকবে।

এই অনুচ্ছেদে হার্নিয়া কি, হার্নিয়া রোগের লক্ষণ  কারণ, প্রকারভেদ, কিভাবে নির্ণয় করা হয়, হার্নিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি, অপারেশনের পর করণীয় বিষয়াবলী ও জটিলতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও শিশুদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া হতে পারে কিনা, হার্নিয়া প্রতিরোধের উপায় এবং হার্নিয়া হলে ব্যায়াম করা যাবে কিনা তা জানতে অনুচ্ছেদটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

হার্নিয়া রোগ কি? What is Hernia

পেটের পিছনের দিকে থাকে হাড়, সামনে রয়েছে পেশি। তার ভিতরে থাকে অন্ত্র, নালি, চর্বি ইত্যাদি। কিন্তু পেটের মধ্যে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে এই ভিতরের পদার্থগুলি বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইবে। একেই হার্নিয়া বলে।

 হার্নিয়াঃ আড়ালে থাকা কঠিন রোগ

হার্নিয়া হওয়ার কারণ কি?  (হার্নিয়া কেন হয়?)

সাধারণত পেটের কোনো সার্জারি করা হলে পেরিটোনিয়ামে দুর্বল জায়গা সৃষ্টি হয় যেখান থেকে পরবর্তীতে হার্নিয়া হয়ে থাকে। তবে এর বাইরেও আরো অনেক গুলো কারণে হার্নিয়া হতে পারে। যেমনঃ

  • কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation)
  • মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দেওয়া
  • দীর্ঘমেয়াদী কাশি
  • প্রস্রাবের অতিরিক্ত চাপ
  • অপুষ্টি (Malnutrition)
  • স্থূলতা (Obesity)
  • অতিরিক্ত ওজন বহন করা
  • ধুমপানের অভ্যাস
  • পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস
  • সিস্টিক ফাইব্রোসিস (cystic fibrosis)
  • প্রস্টেট বড় হয়ে যাওয়া
  • অন্ডকোষের সমস্যা ইত্যাদি

হার্নিয়া কত প্রকার ?

মিশিগান বিশ্বিবদ্যালয়ের তত্বাবধানে কাজ করা স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণামূলক ওয়েবসাইট University of Michigan Health এর তথ্য অনুযায়ী হার্নিয়া ৬ প্রকারের হয়ে থাকে। যেমনঃ (University of Michigan Health, n.d.)

  • ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (Inguinal hernia)
  • আম্বিলিকাল হার্নিয়া (Umbilical hernia)
  • ফিমোরাল হার্নিয়া (Femoral hernia)
  • হায়াটাল হার্নিয়া (Hiatal hernia)
  • ইন্সিশনাল হার্নিয়া (Incisional hernia)
  • এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া (Epigastric hernia)

চলুন এবার ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে হার্নিয়ার ধরণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।

১. ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া

পুরুষের ক্ষেত্রে যে পথ দিয়ে অণ্ডকোষ থলিতে নেমে আসে, বা নারীদের ক্ষেত্রে যেখানে জরায়ুর লিগামেন্ট থাকে, সেই পথ গুলোকে বলা হয় ইঙ্গুইনাল ক্যানাল। কোনো কারণে ইঙ্গুইনাল ক্যানালের পেশী দুর্বল হয়ে গিয়ে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই জায়গা ভেদ করে তলপেট থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া বলা হয়। এই হার্নিয়া সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে।

২. আম্বিলিকাল হার্নিয়া

মানব দেহের নাভির কাছের মাংশপেশী দুর্বল হয়ে থাকলে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই দুর্বল পেশী ভেদ করে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করে বা বের হয়ে যায়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় আম্বিলিকাল হার্নিয়া বলে। আম্বিলিকাল হার্নিয়ায় আক্রান্ত অংশ ফুলে থাকার কারনে এই ধরণের হার্নিয়া বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায় এবং সাধারণত বেশ স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। নারী – পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রেই এই হার্নিয়া হতে পারে।

৩. ফিমোরাল হার্নিয়া

মানব দেহের ঊরুর উপর দিকে ধমনী বহনকারী ক্যানেলের (Femoral canal) ভিতর দিয়ে যখন অন্ত্রের কিছু অংশ দুর্বল আবরণ ভেদ করে প্রবেশ করে, তখন একে ফিমোরাল হার্নিয়া বলা হয়। সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই হার্নিয়ার উপস্থিতি বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে অতিরিক্ত ওজন (Overweight) এবং গর্ভবতী নারী।

৪. হায়াটাল হার্নিয়া

মানুষের শরীরের যে বড় পেশীটি বুক ও পেটের মাঝামাঝি থাকে, তাকে ডায়াফ্রাম বলে। ডায়াফ্রাম পেশীর একটি খোলা অংশ রয়েছে যেখানে খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর সাথে সংযোগ হয়েছে। এই অংশকে হায়াটাস (hiatus) বলে। পাকস্থলীর কোন অংশ যদি ডায়াফ্রামের ওই সংযোগস্থল ভেদ করে বুকের দিকে উঠে আসে, তাহলে এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় হায়াটাল হার্নিয়া বলা হয়।

৫. ইন্সিশনাল হার্নিয়া

কোন মানুষের পেটে যদি কখনো কোন অস্ত্রোপচার বা‌ সার্জারি হয়ে থাকে এবং পেটের সেই পুরোনো অস্ত্রোপচারের জায়গা দিয়ে যদি অন্ত্রের কোনো অংশ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে বা বের হয়ে যায়, তখন তাকে ইন্সিশনাল হার্নিয়া বলে। সাধারণত সেই অস্ত্রোপচারের কারণে যদি পেটের পেশী দুর্বল হয়ে যায় অথবা যদি উন্নতমানের সুতো ব্যবহার না করা হয়ে থাকে, তাহলে নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এই ধরনের হার্নিয়া হতে পারে।

৬. এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া

এপিগ্যাস্ট্রিক (Epigastric) মেডিকেল টার্মটি দ্বারা পেটের উপরের দিকের অংশকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ বুকের ঠিক নিচে এবং নাভীর উপরের দিকের অংশের পেরিটোনিয়াম ভেদ করে যে হার্নিয়া হয় তাকে এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া বলে। সাধারণত হাঁচি, কাশি অথবা হাসাহাসির সময় এই হার্নিয়া লক্ষ্য করে দেখা যায়।

হার্নিয়া রোগের লক্ষণ কি?

শরীরের ফুলে ওঠা অংশটি বা লাম্পটি হার্নিয়ার জন্য হয়ে থাকলে, তা হাত দিয়ে চাপ দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া বা নাড়ানো যায়। লম্বা হয়ে শুয়ে থাকলে লাম্পটি অদৃশ্য হয়ে যায়, উঠে দাড়ালে সেটি আবার বের হয়ে যেতে পারে। হার্নিয়া রোগের আরো কিছু উপসর্গ হলোঃ

  • ফোলা অংশে ব্যথা
  • ফোলা অংশের আকার বৃদ্ধি
  • ভারী কিছু তুলতে ব্যথা বোধ
  • অন্ডকোষে ফুলে যাওয়া
  • ক্ষুধামন্দা (Loss of appetite)
  • খাদ্য হজমে সমস্যা
  • মলত্যাগে কষ্ট
  • বুক জ্বালাপোড়া (হায়াটাল হার্নিয়া)
  • খাবার গিলতে অসুবিধা
  • খাবার উপরের দিকে উঠে আসা
  • কাশি দিলে লাম্প বাইরের দিকে বের হয়ে আসা
  • বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে কষ্ট
  • বুকে ও পেটে ব্যথা ইত্যাদি

পুরুষের হার্নিয়া রোগ কেন হয়

পেটের উপরিভাগের আবরণ বা প্রাচীর হচ্ছে পেরিটোনিয়াম যার কাজ হলো পেটের ভিতরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে যথাস্থানে রাখা। কোনো কারণ বশত এই প্রাচীর দুর্বল হয়ে পড়লে তখন পেটের মধ্যকার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অথবা টিস্যু পেরিটোনিয়াম ভেদ করে বেরিয়ে ফোলাভাব বা লাম্প (Lump) তৈরী করে যাকে মেডিকেলের ভাষায় হার্নিয়া (Hernia) বলে।

কীভাবে হার্নিয়া নির্ণয় করে? 

হার্নিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রকৃতই হার্ণিয়া হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণত আক্রান্ত অংশ ফুলে থাকে বলে শারীরিক পরীক্ষা (Physical examination) এর মাধ্যমেই যে জায়গায় হার্নিয়া হয়েছে সেখানে দেখা বা অনুভব করা সম্ভব। এছাড়াও দেখার সুবিধার্থে চিকিৎসকেরা রোগীকে কাশি দিতে বলে।

বিশেষত ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া নির্ণয় করার জন্য অণ্ডকোষ ও কুঁচকির চারপাশের এলাকা অনুভব করে দেখা শারিরীক পরীক্ষাই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়াও সঠিক ও স্পষ্টভাবে হার্নিয়া নির্ণয় করার জন্য অনেকসময় চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যান (C T scan) অথবা আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

হার্নিয়া রোগের চিকিৎসা

হার্নিয়া রোগের চিকিৎসা

হার্নিয়া রোগের ক্ষেত্রে যদি খুব জটিল প্রকৃতির লক্ষণ দেখা না দেয় সেক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে না। তবে যথাসময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং নিয়মিত ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। সেই সাথে যদি চিকিৎসক মনে করেন যে ক্ষেত্রে সার্জারি না করলে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে বিশেষত ফেমোরাল হার্ণিয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত সার্জারি করাতে হবে।

হার্নিয়া অপারেশন

হার্নিয়ার অপারেশন বা সার্জারিকে মেডিকেলের ভাষায় herniorrhaphy বলা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত দুইটি পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়ে থাকে। যেমনঃ

  • ওপেন সার্জারি (open surgery)
  • ল্যাপরোস্কপিক (laparoscopic)

সার্জারির মাধ্যমে পেরিটোনিয়ামের দুর্বল অংশ যেখানে হার্নিয়া হয়েছে সেই জায়গাটা রিপেয়ার করে দেওয়া হয় যেন পেটের মধ্যকার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আর বেরিয়ে আসতে না পারে। ওপেন সার্জারির তুলনায় ল্যাপরোস্কপিক পদ্ধতি কিছুটা ব্যয়বহুল তবে এক্ষেত্রে ইনফেকশন সহ জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। সেই সাথে রোগী দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি রয়েছে। তবে সবধরনের হার্নিয়ার ক্ষেত্রে ল্যাপরোস্কপিক পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না। সুতরাং কোন পদ্ধতি আপনার ক্ষেত্রে ভালো হবে তা হার্নিয়ার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করতে হবে।

হার্নিয়া অপারেশনের পর করণীয়

হার্নিয়া অপারেশনের পর সামান্য ব্যথা হতে পারে যার জন্য চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। সেই সাথে অবশ্যই বিশ্রামে থাকতে হবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। অপারেশনের পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত ভারী কাজ করা যাবে না। এছাড়াও ইনফেকশন দেখা দিলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কি কি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে পারবেন যে ইনফেকশন হয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • উচ্চ মাত্রার জ্বর (fever)
  • অপারেশনের স্থানটি লাল হয়ে যাওয়া বা ফুলে উঠা (Swelling)
  • রক্তক্ষরণ বা পুঁজ বের হওয়া
  • হঠাৎ তীব্র ব্যথা ইত্যাদি

হার্নিয়া জটিলতা

হার্নিয়ার লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হওয়া অথবা প্রয়োজন মাফিক সার্জারি করানো না হলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী হার্নিয়ার ক্ষেত্রে পেটের ভেতরের একটি অংশ পেরিটোনিয়ামের মধ্যে এমনভাবে আটকে যেতে পারে ফলে সেই অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় যাকে strangulated hernia বলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। হার্নিয়ার ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার কতিপয় লক্ষণ হলোঃ

  • হার্নিয়ার অংশ লাল হয়ে যাওয়া
  • ব্যথা ক্রমে ক্রমে তীব্র হতে থাকে
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি হয়
  • পেটের গ্যাস বের হয় না
  • পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়
  • জ্বর থাকতে পারে ইত্যাদি

ছোট শিশুরও কী হার্নিয়া হতে পারে?

কিছু কিছু শিশু জন্মের সময়ই নাভিতে হার্নিয়া বা আম্বিলিকাল হার্ণিয়া নিয়ে জন্মায়। জন্মের পর নাভি এমনিতেই ফোলা থাকে যাকে Umbilical cord বলা হয়। আর তাই শিশুদের ক্ষেত্রে শুরুতে এই ধরনের হার্ণিয়া সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে যদি বাচ্চার হার্নিয়া হয়ে থাকে, তাহলে শিশুটির কাশি, হাঁচি বা কান্নাকাটির সময় তার পেটের দিকে লক্ষ করলে নাভির চারপাশে ফুলে উঠা চোখে পড়ে। মজার বিষয় হলো এটিই একমাত্র হার্নিয়া যা শিশুর বয়স দুই বছরের মধ্যে কোনো চিকিৎসকের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজে থেকে ভালো হয়ে যেতে পারে। তবে ৫ বছরের মধ্যেও ভালো না হলে বা মাঝে মধ্যেই ব্যথার সৃষ্টি করলে অথবা হার্ণিয়া আরো বাড়তে থাকলে সেক্ষেত্রে সার্জারি করাতে হবে। (Wint, 2021)

হার্নিয়া প্রতিরোধ

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিশ্চিত ভাবে হার্নিয়া প্রতিরোধ করা যায় না। তবে কতিপয় নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে হার্নিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। যেমনঃ

  • ধুমপান বর্জন করতে হবে
  • দীর্ঘমেয়াদী কাশি যেন না থাকে সেই জন্য কাশির শুরুতেই ওষুধ সেবন করুন
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
  • প্রস্রাব ও পায়খানা করার সময় খুব বেশি চাপ দেওয়া যাবে না
  • কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন
  • খুব বেশি ভারী বস্তু একা একা উঠানোর চেষ্টা করবেন না ইত্যাদি

হার্নিয়া ব্যায়াম

হার্নিয়ার রোগীদের জন্য ব্যায়াম করা যাবে কিনা‌ এই প্রশ্নের উত্তরে হলো করা যাবে। কারণ ব্যায়ামের ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং পেটের মাংশ পেশী শক্তিশালী হয় যা হার্নিয়ার লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে। তবে এক্ষেত্রে খুব জোড়ালো প্রকৃতির ব্যায়াম করা যাবে না যা পেটের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। যেমনঃ ভারোত্তোলন, planks, sit-ups, crunches, জোরে দৌড়ানো, লাফালাফি করা ইত্যাদি। বরং হাঁটাহাঁটি, সাঁতার করা, যোগব্যায়াম এবং হালকাভাবে জগিং করতে পারেন। উল্লেখ্য সুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম করার ফলে হার্নিয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যায়।

নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে হার্নিয়া থেকে দূরে থাকা অনেকটাই সম্ভব। তবে হার্নিয়ার একবার দেখা দিলে সেক্ষেত্রে লক্ষণ চেপে না রেখে বরং একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সেই সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজন সাপেক্ষে প্রাথমিক পর্যায়েই‌ সার্জারি করিয়ে নিতে হবে।‌

 

 

References

University of Michigan Health. (n.d.). Hernia Surgery. From University of Michigan Health;: https://www.uofmhealth.org/conditions-treatments/surgery/hernia-surgery

Wint, C. (2021, oct 02). Everything You Want to Know About a Hernia. From healthline: https://www.healthline.com/health/hernia

 

 

Last Updated on May 6, 2023